আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীর শাস্তি

ইসলাম ডেস্ক।। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীদের নিন্দা করেন এবং তাদেরকে লা’নত ও অভিসম্পাত দেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,“ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারলে সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ তা‘আলা এদেরকেই করেন অভিশপ্ত, বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২২-২৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,“যারা আল্লাহ তা‘আলাকে দেওয়া দৃঢ় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের জন্য রয়েছে লা’নত ও অভিসম্পাত এবং তাদের জন্যই রয়েছে মন্দ আবাস”। [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৫]

তিনি বলেন: “এবং আল্লাহ যে সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন তারা তা বজায় রাখে।” [সুরা রাআদ : আয়াত-২১] এবং ইসলাম তাগিদের সাথে নিকট জনের অধিকার আদায়ের নির্দেশ দেয়: এবং আত্মীয়কে তার প্রাপ্য অধিকার দাও। [আল ইসরা-আয়াত -২৬]

আল-কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানব জাতি! তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সে একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দুজনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাক এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থেক। নিশ্চিতভাবে জেনে রেখো, আল্লাহ তোমাদের সব কর্মকাণ্ড সূক্ষ্মভাবে প্রত্যক্ষ করছেন’ (সুরা নিসা-১)। 

আল কোরআনের আরও কিছু আয়াতে আত্মীয়তার বিষয়টি আলোকপাত করা হয়েছে। ‘আল্লাহ ন্যায়নীতি, পরোপকার ও আত্মীয়স্বজনদের দান করার হুকুম দেন এবং অশ্লীলতা, দুষ্কৃতি ও অত্যাচার-বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা লাভ করতে পার’ (সুরা নাহল-৯০)। 

মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘কাজেই (হে মুমিনগণ!) তোমরা আত্মীয়দের তাদের অধিকার দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরকে (দাও তাদের অধিকার)। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে তাদের জন্য এটা উত্তম এবং তারাই সফলকাম হবে’ (সুরা রুম-৩৮)। 

আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে সবচেয়ে নিকটতম হলো পিতামাতা। কাফির-মুশরিক পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানের সুসম্পর্ক বজায় রাখা বৈধ। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তবে পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে সদ্ভাবে বসবাস করবে’ (লোকমান ৩১/১৫)।

বংশীয় দিক দিয়ে নিকটাত্মীয় হচ্ছেন পিতা-মাতা। তবে এর মধ্যে মায়ের স্তর ঊর্ধ্বে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘আমরা তো মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। জননী সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তন তো আমারই কাছে’ (লোকমান ৩১/১৪)।

হাদীসে কুদসীতে এসেছে, “আল্লাহ তা’আলা আত্মীয়তার বন্ধনকে খেতাব করে বলেন: যে তোমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব। আর যে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব।” [বুখারী -৫৫২৯] ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা খুবই জঘন্য অপরাধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *