শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার।। কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিখোঁজের ১৪ দিন পর স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ এর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিকে, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পেকুয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।
শুক্রবার ১১ই অক্টোবর বিকালে নিজ বাড়ীর পাশে পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা মরদেহটি উদ্ধার করে বলে জানান, পেকুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল মোস্তফা। নিহত মোহাম্মদ আরিফ (৪২) পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাতব্বর পাড়ার মৃত বজল আহমদের ছেলে। তিনি পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে পেকুয়া চৌমুহনী থেকে বাড়ী ফেরার পথে ফায়ার সার্ভিসের সামনে থেকে আরিফকে ৮-৯ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী জোর পূর্বক গাড়ীতে তুলে অপহরণ করে বলে দাবি করেছিলেন আরিফের স্ত্রী মেহেবুবা আনোয়ার লাইজু। অপহরণের পর আরিফের স্ত্রী মেহেবুবা আনোয়ার লাইজু চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনও করেন। সেখানে তিনি দাবী করেন, জায়গা-জমির বিরোধ নিয়ে তাদের কোনঠাসা করতে ও মুক্তিপণ আদায় করতে তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে।
অপহরণের পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার শ্বাশুড়ির মুঠোফোনে কল করে আরিফকে জীবিত ফিরে পেতে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। এতে অপহরণকারিরা প্রথমে ২৫ লাখ টাকা, দ্বিতীয় দফায় ৬০ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল বলে তার স্ত্রী লাইজু দাবী করেন। লাইজুর দাবী মতে, বেশি টাকা না থাকায় স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে নগদ পেমেন্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার দেন।
এ ব্যাপারে থানাসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার বিকালে শিক্ষক আরিফের বাড়ির পাশে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় সন্দেহজনক একটি বস্তা দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তারা বস্তাটি খুলে একটি মৃতদেহ দেখতে পান। আরিফের স্ত্রীসহ স্বজনরা মৃতের পরিহিত পোষাক দেখে মৃতদেহটি শনাক্ত করেন।মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, শিক্ষক আরিফকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকশত লোক পেকুয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এতে বাড়ীটির বেশ কিছু অংশ ভস্মিভূত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মিরা পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে ওসি সিরাজুল মোস্তফা জানান, ঘটনায় উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।