এইচএমপিভি ভাইরাসের লক্ষণ

এস এম আওলাদ হোসেন, সিনিয়র রিপোর্টার।। করোনা মহামারির পাঁচ বছর পর চীনে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নামে এক ভাইরাসের আবির্ভাব হয়েছে।

চীনের বাইরে জাপান, ভারত, মালয়েশিয়ায়ও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জানা যায়, ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে ভাইরাসটি সর্বপ্রথম শনাক্ত হয়েছিল।

এইচএমপিভি আক্রান্ত যেকোনো জীব বা জড় উপাদানের সংস্পর্শ থেকে ভাইরাসটি মানবদেহে ঢুকতে পারে। ভাইরাসটি নির্দিষ্ট কিছু জড় উপাদানের পৃষ্ঠে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

এই ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গগুলো হলো- সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ইত্যাদি। এতে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু এবং বয়স্করা। প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এটি উত্তর এশিয়ায় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি তেমন ক্ষতিকারক নয়। করোনার তুলনায় মোটেও শক্তিশালী নয়। এর লক্ষণ সাধারণ নিউমোনিয়ার মতো; জ্বর-সর্দি-কাশি হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। মৃত্যুর আশঙ্কা কম। মৃত্যুহার নেই বললেই চলে।

তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কোভিড-১৯ মানুষের মনে অন্য রকম ভয় সৃষ্টি করেছে। তার পর থেকে কোনো দেশে কোনো ভাইরাস সংক্রমণের কথা শুনলেই মানুষ আঁতকে ওঠেন।

সম্প্রতি চীন-জাপানে এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাবের খবরে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক-উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এতদিন উদ্বেগ কম থাকলেও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে দুই শিশুর শনাক্তের খবরে বাংলাদেশে অনেকের মনে কিছুটা ভয় দেখা দিয়েছে। তবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

হালকা লক্ষণ: সর্দি, নাক বন্ধ, কাশি, গলা ব্যথা, হালকা জ্বর, প্রচণ্ড ক্লান্তি ইত্যাদি। গুরুতর লক্ষণ: শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা, বুক ব্যথা, অবিরাম কাশি ইত্যাদি। হালকা উপসর্গগুলো সাধারণত সাত থেকে ১০দিন স্থায়ী হয়। তবে গুরুতর অবস্থায় গেলে দীর্ঘস্থায়ী জটিলতায় রূপ নিতে পারে।

সংক্রমণ হয় যেভাবে–? এইচএমপিভির মাধ্যমে দূষিত কোনো বস্তুকে স্পর্শ করার পর মুখ, নাক বা চোখে স্পর্শ করলে এর সংক্রমণ হতে পারে। যেমন- দরজার হাতল, টেবিল এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মতো জিনিসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

এছাড়া, এইচএমপিভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, এমনকি কথা বলার সময় মুখ থেকে বের হওয়া অল্প তরলও সংক্রমণের কারণ হতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের ক্যান্সার, হৃদরোগ বা শ্বাসনালি সংক্রান্ত দুরারোগ্য ব্যাধি রয়েছে তাদের এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার * খাবারের আগে ও পরে সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়া এবংবাইরে থেকে ঘরে ঢোকার সময় শরীরের উন্মুক্ত জায়গাগুলো ধুয়ে নেওয়া। * আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা। * কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় সর্বদা মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে রাখা। * যেসব গৃহস্থালি বস্তুগুলো সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো নিয়মিত স্যানিটাইজ করা। * ঘরের ভেতর বায়ুচলাচল নিশ্চিত করা। এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *