তাহসিন মেহেরাব শাওন,ঈদগাঁও(কক্সবাজার): চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’ এবং‘শৈবাল এক্সপ্রেস’নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হচ্ছে। ট্রেনটি যাত্রাপথে ইসলামাবাদ রেল স্টেশনে থামবে।
২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেল চলাচল হলেও দূর্ভাগ্যজনক ভাবে পুরো একটি বছর রেল সেবা থেকে বঞ্চিত ঈদগাঁও উপজেলার মানুষ।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৯টি স্টেশনের মধ্যে ৮টি স্টেশনে রেল থামলেও কোন এক অজানা কারণে রেল চলাচলের এক বছরেও ঈদগাঁও’র ইসলামাবাদে ট্রেন থামে নি।
অবশেষে ঈদগাঁও উপজেলাবাসীর দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। গত ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের নতুন ট্রেন চলার প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ছেড়ে আসা ৮২২ ও ৮২৩ নম্বর এক জোড়া ট্রেন ১ ফেব্রুয়ারি থেকে থামবে ঈদগাঁও’র ইসলামাবাদ রেলস্টেশনে। ৮২২/৮২৩(প্রবাল এক্সপ্রেস) প্রতিদিন কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন থেকে সকাল ১০:৩৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌছাবে দুপুর ১৪:২৫ মিনিটে এবং ফিরতি ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে বিকাল ০৩:১৫ মিনিটে ছেড়ে কক্সবাজার পৌছাবে সন্ধ্যা ৭:০০ টায়।
ট্রেনটি যাত্রাপথে ঈদগাঁও উপজেলায় নির্মিত ইসলামাবাদ রেল স্টেশনসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের সব রেল স্টেশনে থামবে। ইসলামাবাদ ইউপি সদস্য দিদারুল ইসলাম এমইউপি জানান,ট্রেন থামবে ইসলামাবাদ রেলস্টেশনে।
বহুল প্রতিক্ষিত এই স্বপ্ন পূরণ হবে ঈদগাঁও উপজেলাবাসীর। ইসলামাবাদে ট্রেনের যাত্রা বিরতি দেওয়ায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তবে ইসলামপুর ইউনিয়নের ছাত্রনেতা জসিম উদ্দীন জানান ভিন্ন কথা, কক্সবাজার রুটে ট্রেন এই সুবিধা শুধু মাত্র পর্যটকদের জন্য। তারা সকালে কক্সবাজার আসবে, রাতে চলে যাবে।
সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে কাজকর্ম শেষ করে রাতে কক্সবাজার ফিরে আসার মত কোন ট্রেন শিডিউল না থাকায় রেলওয়ের নতুন এই রুটে কক্সবাজারের ঈদগাঁওসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাবাসী কোনভাবেই উপকৃত হচ্ছে না।
ঈদগাঁও’র সাংবাদিক আশফাক উদ্দিন আরফাত জানান,রেলপথ চালুর দ্বীর্ঘ এক বছর পর নতুন বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হচ্ছে ইসলামাবাদ রেল স্টেশন।
তবে স্টেশনে অপরাধ প্রবনতা কমাতে ও যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা জরুরি। কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী জানান,জনবল সংকটের কারণে ইসলামাবাদ রেল স্টেশনটি চালু করতে বিলম্ব হয়।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন দুটি যাত্রাপথে ইসলামাবাদে থামবে। বিগত এক বছর রেল সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলো ঈদগাঁও উপজেলাবাসী। অবশেষে স্বপ্ন পূরন হলো ঈদগাঁওবাসীর।
উল্লেখ্য যে,কক্সবাজার রুটের পর্যটকের পাশাপাশি স্থায়ীদের মধ্যেও ব্যাপক ট্রেনের চাহিদা রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে দৈনিক গড়ে ৪০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এরমধ্যে ৮-১০ হাজার মানুষ যদি ট্রেনে উঠেন,তবে এটি হবেদ সবচেয়ে লাভজনক রুট।
দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়ক, রেলের ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় এই রুটের ট্রেন জনপ্রিয়তা ব্যাপক। কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর পর থেকে গত বছরের ডিসেম্বর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ১০ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৩ জন। রেলের আয় হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা।