এস এম আওলাদ হোসেন, গনমাধ্যমকর্মী:
পরিবর্তন শুরু হয় একজন থেকে, পৌঁছে যায় সবার কাছে। আসে নতুন সময়। নতুন সূর্যোদয়। এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশর আম-জনতা। ৫২,৭১,৯০,২৪ তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়া। কিন্তু বারংবার আমাদের স্বপ্ন ভুলণ্ঠিত হয়েছে।
শাসক গোষ্ঠীর শোষণের রোষানলে খর্ব হয়েছে সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা। যে স্বপ্ন জুলাই আন্দোলন আর এক সাগর রক্তের বিনিময় করার হিম্মত জুগিয়েছে। সে স্বপ্ন কি বাস্তবায়ন হবে ?
এমন শংকা দেশের আম-জনতা'র। ক্ষমতা চাইবেন! রাজা হবেন! এজন্যই তো রাজনীতি। যারা রাজনীতি করেন তারা সবসময় দোশের ১৮ কোটি মানুষের কথা বলেন। বস্তুত সাধারণ মানুষের জন্য কে কতটুকু করেছেন ? যাঁরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিলেন তারাই রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছেন।
বিগত ১৭ বছরে বাংলাদেশের কত টাকা লুটপাট হয়েছে ? এখন পর্যন্ত দেশের আম-জনতা' সঠিক হিসেব পায়নি। মাত্র এই একটা কাজ যদি আমাদের জন্য করতে না পারেন! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়ে দেশের মানুষের জন্য কি সংস্কার করবেন ? সংস্কারের তত্ত্ব বাদ দিন।
গণমানুষের জন্য অন্তত আইন-শৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা ভাবুন। নিজেদের নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে ভূমিকা রেখে সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন-যাপন নিশ্চিত করুন। তারপর পেশীশক্তি ও প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গনতন্ত্র ফিরিয়ে দিন।
ক্ষমতায় বসে রাজনৈতিক দলের প্রভাব এবং লেজুড়বৃত্তিক সরকারের জায়গা থেকে সরে দাঁড়ান। রাজনৈতিক ছাপ হোক আর নিজেদের স্বচ্ছ সরকার হিসেবে পরিচিত করতে চান তা' আম-জনতা'র কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আপনাদের লেজুড়বৃত্তি স্পষ্ট হয়ে গেছে।
এই জায়গা থেকে সরে দাঁড়ান। ফ্যাশিষ্ট দল থেকে শুরু করে আপনারা কাউকে নিরাশ করতে চান না। তাহলে আপনাদের ব্যক্তিত্ব এবং আমজনতার প্রত্যাশা মধ্যে দুরত্ব তৈরি হয়ে গেল নিশ্চিত। জুলাই আন্দোলনে সাফল্য পেয়ে সাধারণ মানুষ অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সবচেয়ে বড়ো প্রত্যাশা করেছেন।
কিন্তু আপনারা রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে বের হতে পারেননি। সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা সাধারণ জনতার। কারণ তাদের ভাগ্য কোন দিকে পরিবর্তন নিয়ে শংকিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ। কিন্তু দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকবে কেন ?
প্রশ্ন এসেই যায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছেন কে ? রাজনৈতিক নেতাদের মতো করে পারফরম্যান্স মিডিয়ার সামনে না দেখিয়ে কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করুন আপনি দেশপ্রেমিক। আপনারা ও যদি রাজনৈতিক নেতাদের মতো করে পারফরম্যান্স দেখানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন তাহলে আম-জনতা আপনাদের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই স্বাভাবিক।
আমরা আমজনতা রাজনীতি বুঝি না। পাতি নেতা কিংবা বড় নেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখিনা। আমরা চাই আমাদের অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের নির্বাচন অনুষ্ঠান রাজনৈতিক প্রভাব ও পেশীশক্তি মুক্ত হওয়ার আশঙ্কা ক্ষীণ হয়ে থেকে যাবে আমজনতার কাছে।