রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাঙ্গাবালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য এবং সাবেক সভাপতিদের স্বাক্ষর জাল করে অর্থকেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করার অভিযোগ রয়েছে।
অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন তার পুত্রবধূ রাবেয়া ইসলাম শাওরাকে সহকারী গ্রন্থাগারক পদে এবং ছেলে রাকিব হোসেনকে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়েছেন। যারা দিনের পর দিন অনুপস্থিত থেকেও প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ভাতা তুলে নিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, নিজের এসব অপকর্ম আড়াল করতে সবশেষ গোপনে প্রতিষ্ঠানের একটি এডহক কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ। এই কমিটিতে জসিম উদ্দিন নামের যে ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয় তিনি ছাত্র জীবনে এই প্রতিষ্ঠানেরই একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছিলেন। এ কারণে কমিটি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়।
গত ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় কমিটি বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি, যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কমিটির একজন অভিভাবক ও একজন শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ করেছেন।
কমিটি বাতিলের দাবিতে করা প্রথম কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জেরে সভাপতি জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই চরমোন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কে.এম. রিয়াজকে মারধরের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমিসহ ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
গত ২০ জানুয়ারি গলাচিপা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জসিম উদ্দিন নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি করেন। শুধু তাই নয়-এরআগে গত ১৫ জানুয়ারি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যক্ষ।
একের পর এক আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। নিজের দোষ আড়াল করতে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটিয়ে ঘটনা অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুরো বিষয়টির অনুসন্ধানের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে আমার পক্ষপাতিত্ব বা অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। আর নজরুল ইসলামের পছন্দের লোক রিপন সভাপতি না হওয়ায় তার এত মাতামাতি।
সভাপতি অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড। আর অপসারণ করার ক্ষমতাও বোর্ডের। তিনি আরো বলেন, ২০২০ সালের জুনে নিয়মতি কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ৪/৫ জন প্রার্থী ছিল। এরমধ্যে আমার পুত্রবধূ নিয়োগবোর্ডে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে কম্পিউটার অপারেটর অফিস সহকারী মর্যাদার পদে আমার ছেলে সর্বোচ্চ মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেয়েছে। সকল তথ্য প্রমাণ আমার কাছে আছে।
এ ব্যাপারে একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর বলেন, এডহক কমিটি বাতিল ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের চলমান কর্মসূচির কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি আমরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।