স্ত্রী সহবাস সম্পর্কে আল্লাহ কোরআনে কি বলেছেন?

ইসলাম ডেস্ক।। আল্লাহ তাআলা বিবাহের মাধ্যমে নারী-পুরুষের যৌন সম্ভোগ তথা বংশ বৃদ্ধিকে কল্যাণের কাজে পরিণত করেছেন। বিবাহের ফলে স্বামী-স্ত্রীর যাবতীয় বৈধ কার্যক্রম হয়ে ওঠে কল্যাণ ও ছাওয়াবের।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ করেন- আর তার নিদর্শনবলীর মধ্যে এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের সঙ্গিণীদের সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। – (সূরা আর রুম- ২১)

সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।(বাকারা-১৮৭)

আর তারা তোমাকে হায়েয(মাসিক) সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েয কালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।(সূরা বাকারা- ২২২)

তোমাদের স্ত্রী তোমাদের ফসলক্ষেত্র। সুতরাং তোমরা তোমাদের  ফসল ক্ষেত্রে  গমনকর,যেভাবে চাও। আর তোমরা নিজদের কল্যাণে উত্তম কাজ সামনে পাঠাও। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় তোমরা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে। আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও।(সূরাবাক্বারা-২২৩)

সহবাসের পদ্ধতি সম্পর্কে সরাসরি কোন বিধি নিষেধ নেই। দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, কাত হয়ে, সামনে থেকে, পিছন থেকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সহবাস করা যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে তা যৌনিপথে করতে হবে।

কিছু বর্ণনায় স্বামী উপরে আর স্ত্রীকে নিচে থাকার কথা বলা হয়েছে। ইহা সুবিধাজনক ও প্রশান্তিদায়ক এবং উত্তম। তবে বাধ্যতামূলক নয়। আর স্ত্রী যদি উপরে থাকে আর স্বামী যদি নিচে থাকে এতে গুনাহের কিছু নেই। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে এই পজিশনে বীর্যপাত হলে বীর্য আটকে কষ্টের কারণ হতে পারে।

পজিশনের কারণে সন্তান বিকলাঙ্গ হবে এ কথা ভিত্তিহীন। এ কথার ইসলামী শরিয়তে এবং বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই।

ইসলামে স্ত্রীর সাথে পায়ুপথে সহবাস করা হারাম করেছে। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মলদ্বারে সঙ্গম করে আল্লাহ তার দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকান না।’ পায়ুপথ বা মলদ্বারে সহবাস করে ফেললে গোনাহগার হবে। এইজন্যে তওবা করতে হবে। এছাড়াও পায়ুপথে সহবাস করলে রোগ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সহবাসের পর গোসল করতে হয়। এক্ষেত্রে কথা হচ্ছে বীর্যপাত হলে গোসল ফরজ। আবার বীর্যপাত ছাড়াও যদি স্ত্রীর লজ্জাস্থানে সঙ্গম করা হয় তাহলেও গোসল ফরজ হয়ে যাবে। যৌন মিলনের পরেই দ্রুত গোসল করে নেওয়া উত্তম। পরে করলেও সমস্যা নেই। তবে নামাজের পূর্বে অবশ্যই গোসল করে নিতে হবে। গোসল স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *