সৈকতের জেটি অপসারণ দাবিতে আট সংগঠনের মানববন্ধন

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার।। ইসিএ আইন লঙ্ঘন ও সমুদ্র সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে কক্সবাজারের উখিয়ায় ইনানী সৈকতে নির্মিত জেটি উচ্ছেদ দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী আটটি সংগঠন।

বুধবার ৬ নভেম্বর সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখণ্ডিত সমুদ্রসৈকত। এটি বাংলাদেশি প্রত্যেক মানুষের গর্বের ঐতিহ্য। অথচ প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এই সৈকতকে দ্বিখণ্ডিত করে ২০২১ সালে ইনানী সৈকতে অপরিকল্পিতভাবে  একটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়।

তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক একটি মহড়ার জন্য এই জেটি নির্মাণ করা হয়েছিল। গত বছর থেকে এই জেটি ব্যবহার করে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির জাহাজ সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক পারাপারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়া দেশের প্রচলিত আইন ও ইসিএ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে জেটিটি নির্মাণ করা হয়। জেটি নির্মাণের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে কক্সবাজারবাসীর পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা করা হয়।

হাইকোর্ট কেন এই জেটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেন, যা এখন নিষ্পত্তির জন্য (পেন্ডিং) আছে। জেটি উচ্ছেদের জন্য ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছে পরিবেশবাদীরা।

মানববন্ধনে অংশ নেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, কক্সিয়ান এক্সপ্রেস, ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস), সেভ দ্যা এনভায়রনমেন্ট অব বাংলাদেশ (সেব) ও গ্রীন ভয়েস।

এতে বক্তব্য রাখেন, বাপা কক্সবাজার শাখার সভাপতি এইচ এম এরশাদ, সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম, ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) এর প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, জেটিটি ইনানী সমুদ্রসৈকতের মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পর্যটকের সমাগম বৃদ্ধি এবং যানবাহনের চলাচল শুরু হওয়ায় বালুচরে লাল কাঁকড়ার বিচরণ, বিলুপ্ত প্রজাতি কচ্ছপের ডিম পাড়ার জায়গা এবং ডলফিনের বিচরণক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় দানার আঘাতে জেটির মধ্যভাগের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। এ জেটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পর্যটক পারাপারের জন্য নিরাপদ নয়। যেখানে একটি বার্জের ধাক্কায় জেটির মূল অংশ ভেঙে যায়, সেখানে জাহাজের ধাক্কা লেগে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন পর্যটকেরা। তাই বক্তারা অবিলম্বে জেটিটি উচ্ছেদের দাবী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *