ধীরগতিতে নামছে পানি, দুর্ভোগে লক্ষ্মীপুরের বানভাসি মানুষ

এস এম আওলাদ হোসেন, সিনিয়র রিপোর্টার।। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের ৫ জেলা। এসব জেলার মধ্যে লক্ষ্মীপুরে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে পানি ধীরগতিতে নামতে শুরু করলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি নেই।এ জেলায় পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ। ফলে দুর্ভোগে রয়েছেন এখানকার বানভাসী মানুষেরা।

আকস্মিক এ বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার গ্রাম থেকে গ্রাম পানিবন্দি হয়ে মানুষ। এসব উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার প্রত্যেকটি এলাকার মানুষ এখনও পানিবন্দি। সরকারী হিসেবে পানিবন্দি রয়েছে অন্তত ১০ লাখ স্থানীয় মানুষ। খাবার, সুপেয় পানির জন্য চারদিকে এখন ভানবাসী মানুষের হাহাকার।

পৌরসভার বাসিন্দা মিলন বলেন, ‘বুধবারের তুলনায় বাসা থেকে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি কমছে। কিন্তু সামনের যে সড়ক দিয়ে যাতায়ত করছি। সেখান থেকে একটু নামনি।’

একই কথা জানিয়ে পারভেজ ভূইয়া বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে পানিবন্দি। অনেক দিন পর সূর্যের দেখা মিলছে। রৌদ উঠছে। জমে থাকা জামা-কাপড় শুকাতে পারছি। তবে যেভাবে পানি নামছে, যদি এইভাবে ধীরগতিতে পানি নামে, তাহলে তেমন উন্নতি হবেনা। দুর্ভোগ রয়ে গেছে।’

এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পানিবাহিত নানা রোগ। ১৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় নেয়া মানুষগুলো নানা সমস্যায় ভুগছেন। ঠিকমতো খাওয়া-ধাওয়া হচ্ছেনা। রয়েছে ঔষধ, স্যালাাইন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটও। আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। পাচ্ছেন না কোন সহযোগিতা।

সবচেয়ে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে প্রসূতি মা ও শিশু এবং বৃদ্ধরা। কোথাও হাটু, কোথাও কামর এবং কোথাও গলা পরিমান পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। রশিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নেওয়া সুমি বলেন, ‘এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। খাওয়া-দাওয়া করতে পারছি না। সামান্য শুকানো খাবার ও ত্রান দেওয়া হয়। এটা দিয়ে চলে না।’

এদিকে বিশেষ করে রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মান্দারী, চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, বাঙ্গাখাঁ, কুশাখালী, লাহারকান্দি,পাবর্তীনগর, বশিকপুর, হাজিরপাড়া ও উত্তর জয়পুরসহ ৫৮টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত রয়েছে। এবিষয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, ‘বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে মেঘনার পানি বিপদ সীমার অনেক নিচে। ধীরগতিতে পানি নামছে। অনেক খালের বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। আশা করি খুবই শীঘ্র বন্যার উন্নতি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *